লালমনিরহাটে কর্মরত সাংবাদিক ফারুক আলমকে সব মামলায় জড়াতে থানার ওসিকে চাপ দিচ্ছে একটি মহল। সেই চাপ সামলাতে না পেরে সাংবাদিক ফারুক আলমকে এলাকা ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন ওসি আলী আকবার।
লালমনিরহাট জেলায় কর্মরত সাংবাদিক ফারুক আলমের বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার টিএনটি পাড়ায়। আদিতমারী থানা থেকে হাফ কিলোমিটার দূরে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ওসি আলী আকবার সাক্ষরিত ৪৪.০১০.০০০০.০১৯.৪৮.০০৩.২২-৪২৭(১৮) স্মারকের একটি ডেভিল হান্টের তালিকায় ৩৯ নম্বরে সাংবাদিক ফারুক আলমের নাম দেয়া হয়েছে। তালিকায় সাংবাদিককে আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য ও পলাতক দেখানো হয়েছে। অথচ সাংবাদিক ফারুক আলম নিয়মিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে কথা বলছে। এমন কি ওসি আলী আকবরের সাথেও খবরের প্রয়োজনে নিয়মিত কথা হয়। এ বিষয়ে ওসি আলী আকবার প্রথমে ডেভিল হান্টে নাম দেয়ার কথা অস্বীকার করেন। পরে ডেভিল হান্টের তালিকা দেখালে তিনি অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। এবং তিনি এই নাম দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে ভুলটি সমাধাণের আশ্বাস দেন। ফারুক আলমের পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়, আমি একজন সংবাদকর্মী। আমরা আর পুলিশ প্রায় একই রকম কাজ একই সাথে করি। মাঠ পর্যায়ে থাকতে হয়। ভুলটি সংসোধনের বিষয়ে জানাবেন। অন্যথায় আমাকে আমার সহকর্মী, অফিসকে জানাতে হবে। আমার দায়বদ্ধতা আছে।
৪ মার্চ সাংবাদিক ওসি আলী আকবারকে বলেন, আমি একজন কবি, লেখক, সংবাদকর্মী। বিভিন্ন স্থান থেকে সম্মাননা পেয়েছি। আমার লেখা গল্প-কবিতা, পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়। আমার পরিবারের এবং বাবা-চাচার বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ, মামলা, সাধারণ ডায়রী (জিডি) নাই। এর পরেও আমাকে আপনার আতঙ্কবাদী মনে হয়েছে। যা দুঃখজনক। আপনার কাজ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা। উপজেলার আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমাকে আপনার প্রয়োজন হলে একবার ফোন দিয়ে বলবেন, আমি স্বশরীরে হাজির হয়ে আপনার টেবিলের সামনে সাথে সাথে স্যারেন্ডার করবো। আমি আতঙ্কবাদি হয়ে থাকতে চাইনা।
সেই দিন ওসি ডেভিল হান্টের তালিকায় নাম দেয়াটি অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে স্বীকার করেন। এবং দ্রুত সমাধান করতে চেয়ে বলেন, “আমি এটা করেছি, আমার ওপর ছেড়ে দেন, দেখেন আমি কি করি, আপনি কেনো স্যারেন্ডার করবেন।”
২০২৪ সালের ৪ আগস্টের একটি ঘটনায় ২০২৫ সালের ৩ আগস্টে একটি মামলা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সোর্স থেকে সাংবাদিক ফারুক আলমের কাছে পুলিশি হয়রানিমূলক হুমকি আসতে থাকে।
এ বিষয়ে ১৭ মার্চ লোক পাঠিয়ে সাংবাদিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ওসি বলেন, “আমি ওনাকে সরে থাকতে বলেছি। আমার ওপর খুব খুব খুব চাপ। ওনাকে সব মামলায় জাড়ানোর চাপ। সমস্যা হচ্ছে আমার থানা থেকে ৪ আঙ্গুল দূরে ওনার বাড়ি। রাজ্জাক সাংবাদিক সব সময় চাপ দিচ্ছে। ওনার সাপোর্টে আর আমি কথা বলতে পারবোনা। ওনি যা কিছু করার সদরে গিয়ে করুক”।
কারা চাপ দিচ্ছে, কেনো চাপ দিচ্ছে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে আদিতমারী থানার ওসি আলী আকবর মাগরীবের নামাজের পরে ডাকেন।